etcnews
ঢাকাFriday , 27 December 2024
  1. অন্যান্য
  2. জাতীয়
  3. প্রযুক্তি
  4. বানিজ্য
  5. বিনোদন
  6. বিশ্ব
  7. ভিডিও গ্যালারি
  8. রাজনীতি
  9. লাইফস্টাইল
  10. সর্বশেষ
  11. সারাদেশ
  12. স্বাস্থ্য
box ad 6
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৭ বছরে নববর্ষ উদ্‌যাপনে ঢাকায় বায়ুদূষণ বেড়েছে গড়ে ১৯%, শব্দদূষণ ৭৪%

etcnews
December 27, 2024 11:25 am
Link Copied!

খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে আতশবাজি পোড়ানো ও ফানুস ওড়ানোর কারণে রাজধানী ঢাকায় গত সাত বছরে বায়ুদূষণ বেড়েছে গড়ে ১৯ শতাংশ। অন্যদিকে একই সময়ে একই কারণে শব্দদূষণ বেড়েছে গড়ে ৭৪ শতাংশ।

আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নববর্ষে আতশবাজি পোড়ানো-ফানুস ওড়ানোর কারণে সৃষ্ট বায়ু ও শব্দদূষণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ এবং আতশবাজি-ফানুসমুক্ত নববর্ষ উদ্‌যাপনের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়নকেন্দ্র (ক্যাপস) এ সংবাদ সম্মেলন করে।

ক্যাপসের চেয়ারম্যান ও বেসরকারি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তাঁরা খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্‌যাপনের সময় ধরে এ গবেষণার কাজ করেছেন। এ ছাড়া বায়ুদূষণ নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানের জরিপ ও ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের তথ্য নিয়ে তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গবেষকেরা গত সাত বছর ৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতের সময়টার ঢাকার বায়ুমান নির্ণয় করেছেন। তাঁরা দেখতে পেয়েছেন, খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে ঢাকায় এই সাত বছরে সর্বোচ্চ ৬৬ শতাংশ থেকে সর্বনিম্ন ৬ শতাংশ পর্যন্ত বায়ুদূষণ বেড়েছে। এই সময়ে বায়ুদূষণ গড়ে বেড়েছে ১৯ শতাংশ। করোনার সময়ে (২০২১-২২ সাল) এই দূষণ কমে গিয়েছিল। কারণ, সে সময় মহামারির প্রেক্ষাপটে আতশবাজি পোড়ানো ও ফানুস ওড়ানো হয়নি।

শব্দদূষণের ফলাফল তুলে ধরে কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, এই সাত বছরে ঢাকায় গড়ে ৭৪ শতাংশ শব্দদূষণ বেড়েছে। গত সাত বছরই শব্দের মাত্রা ৭০ ডেসিবেল অতিক্রম করেছে, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর নববর্ষের রাত ১১-১২টার তুলনায় পরবর্তী এক ঘণ্টার বায়ুদূষণ ৩৬ শতাংশ বেড়ে যায়। ২০২৪ সালে তা ৩৫ শতাংশ বেড়েছিল। নববর্ষ উদ্‌যাপন ঘিরে ২০২৩ সালে শব্দদূষণ ১০২ শতাংশ ও ২০২৪ সালে ৪২ শতাংশ বেড়ে যায়।

গবেষণায় বলা হয়, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সাল—এই সময়ের মধ্যে বায়ুমান সূচক কখনোই ভালো অবস্থানে ছিল না। বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে তাকে ‘ভালো বায়ু’ বলা হয়। সে ক্ষেত্রে গত সাত বছরে নির্দিষ্ট দুই দিনে (৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি) কখনোই বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে ছিল না।

গবেষণার তথ্য অনুসারে, ৩১ ডিসেম্বর রাতে নববর্ষ উদ্‌যাপনের আগের তিন ঘণ্টার গড় বায়ুমান থেকে নববর্ষ উদ্‌যাপন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমান অবনতি হতে শুরু করে। রাত ১২টা বাজার কিছু আগে থেকে আতশবাজি পোড়ানো, ফানুস ওড়ানো শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি রাত একটায় প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ২৪৯ মাইক্রোগ্রামে পৌঁছায়, যা মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যের বিশ্রাম ও শান্তি নষ্ট করে—এমন কোনো কিছুই করা যাবে না। এখানে যেভাবে নববর্ষ উদ্‌যাপন করা হয়, তা সাংস্কৃতিক হুমকি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একটি নির্দিষ্ট স্থানে এ ধরনের আয়োজন করা হয়। সরকার সে বিষয়টি ভেবে দেখতে পারে।’

নগর-পরিকল্পনায় উৎসবকে বিবেচনায় রাখা হয় কি না, সে প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক ও নগর–পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান। তিনি বলেন, ‘নগরে উৎসব হবে, কিন্তু সেই উৎসবের জন্য নগরকে গড়ে তোলা হয়নি। উন্নয়নের যে বয়ান, সেখানেও উৎসব থাকে না।’

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নববর্ষ উদ্‌যাপন ঘিরে বায়ুদূষণ-শব্দদূষণ মানুষের জীবন ও পরিবেশের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলছে।

ক্যাপস এই পরিস্থিতি উত্তরণে কিছু সুপারিশ করেছে—আতশবাজি-ফানুসের আমদানি, উৎপাদন, বিক্রয় ও সরবরাহে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ। সীমিত শব্দে দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন। পরিবেশ সুরক্ষা আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা। নববর্ষ উদ্‌যাপনের সময় পশু-পাখিসহ বন্য প্রাণীর নিরাপত্তায় সুরক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, আরণ্যক ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রকিবুল হাসান মুকুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান মজুমদার প্রমুখ।

এই সাইটে কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।