এস, এম, স্বাধীন
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ট্রেন পরিচালনার জন্য রেলের ইঞ্জিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের জন্য গত ১২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে এর যন্ত্রকৌশল শাখার উপ পরিচালক মোঃ শহীদুল আলম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত কমিটিতে দেখা গেছে রেল প্রকৌশলী সহ ৩জন ছাত্র প্রতিনিধি নাম রাখা হয়েছে। এরা হলেন( ১) সাদিফ আরহান (২)নাজিব আহমেদ (৩)আতিফ-উল-কাদির। তবে এই তিন ছাত্র প্রতিনিধি কারা? জানেনা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।
কমিটিতে কলেজর পড়ুয়া ছাত্রদের রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন গ্রুপ লেখালেখি করছেন সাধারণ নাগরিকেরা। এদিকে গত ৫ মাস ধরে রেলওয়ের সাথে সরাসরি সরজমিনে অবৈধ জমি দখল উদ্ধার, রেলের উন্নয়ন সম্ভাবনা সহ সমসাময়িক বিষয়ে নিয়ে কাজ করা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রেলপথ প্রতিনিধিরা বলেন, এই কমিটিতে রাখা ছাত্র প্রতিনিধিদের বিষয়ে তারা কিছুই জানেনা। এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমান বলেন, আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দীর্ঘ ৫ মাস যাবৎ যুক্ত আছি এবং রেল উপদেষ্টার নির্দেশে বাংলাদেশ রেলওয়েকে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহি মূলক এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু ২ দিন আগে একটি লোকোমেটিভ সংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে যেখানে তিনজন কলেজ শিক্ষার্থী রাখা হয়েছে এবং সেটা নিয়ে স্যোশাল মিডিয়াতে তর্ক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ এই কমিটির ব্যপারে আমরা রেলপথ মন্ত্রনালয়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি কেউই জানি না।
এই কমিটি আসলে কে অথবা কার নির্দেশে গঠন করা হয়েছে? এবং কেনোই বা আমাদের ব্যানারে তাদের নাম রাখা হয়েছে? যে অথবা যার নির্দেশে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে সেটার জবাবদিহি চাই। আরেক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা ভোলাগঞ্জ বাংকার পাথর কোয়ারির এলাকা থেকে দখলকৃত ৩৫৯ একর জমি উদ্ধার, ভোলাগঞ্জ স্থল বন্দর থেকে ৯৯.৮ একর জমি উদ্ধার ,ফরিদপুরের সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরীর দখল থেকে ৫০ একর জমি উদ্ধারসহ মাগুরায় জমি অধিগ্রহণ সমস্যার সমাধান করেছি সরজমিনে গিয়ে। এছাড়াও রেলওয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক রক্ষণাবেক্ষণ সহ নানা বিষয়ে আমরা কাজ করছি টানা ৫ মাস ধরে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে কথা না বলে এমন কমিটি দেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
কোন যোগ্যতায় এই তিন ছাত্র কমিটিতে এসেছে এবং তাদের নিয়োগের সুপারিশ করেছে কে? এই বিষয়ে কমিটিতে থাকা ৩ জন ছাত্র প্রতিনিধের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের ফোনে যুক্ত হওয়া যায় নি। একাধিকবার ফোন করলেও তারা কেউ রিসিভ করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেল ভবনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানায় সবথেকে বেশি দুর্নীতি হয় রেলওয়ে ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত এবং ইঞ্জিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে, যেহেতু এই সেক্টরে দুর্নীতি বেশি হয় সেজন্যই হয়তো কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদেরকে রাখা হয়েছে যেন সহজেই দুর্নীতি ও অনিয়ম করা যায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন রেল নিউজকে বলেন, আমরা কোথাও বলিনি এরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি। স্ব-প্রনোদিত হয়ে এই তিনজন ছাত্র রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মহোদয় বরাবর চিঠি দিয়েছেন এ ধরনের কমিটিতে থাকার জন্য। মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের কাছে ফরোয়ার্ড করেছেন। আমরা কমিটিতে রেখেছি। তার মানে এই নয় তাদের অযৌক্তিক কোনো প্রস্তাবনা আমরা মেনে নিবো। কমিটিতে আরো টেকনিক্যাল এক্সপার্ট আছেন। সকলের সম্মতি নিয়ে কাজ করা হবে।