দেশে তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণত বিদ্যুতের চাহিদাও কমে আসে। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। তাপমাত্রার কারণে চাহিদা কমে গেলেও পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না সরকার। গ্যাস সংকটের কারণে এমনিতেই অনেক কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বা কমে গেছে। এই অবস্থায় কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের একমাত্র ভরসা ছিল কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। কিন্তু কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর বিল বকেয়া থাকার কারণে অর্থের তীব্র সংকটে পড়েছে। অর্থের অভাবে কয়লা আমদানি করতে না পারায় এসব কেন্দ্রের উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে দিনেরাতে রাজধানীসহ সারা দেশে লোডশেডিং বেড়ে গেছে। চলতি মাসজুড়ে এই লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা গ্রাহকদের সইতে হবে। ডিসেম্বরে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
এদিকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, শীতের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির চেয়েও বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে আগামী গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে। এজন্য শীত মৌসুমে সব কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে কয়লার পর্যাপ্ত মজুত করা হবে। যাতে গ্রীষ্মে কয়লাভিত্তিক সবকটি কেন্দ্র পূর্ণমাত্রায় চালানো যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়লার অভাবে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। একই সংকটের কারণে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, এসএস পাওয়ার, আদানি পাওয়ার এবং বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি করে ইউনিট চালু করা যাচ্ছে না। কেন্দ্রগুলোর একটি করে ইউনিট চালু থাকলেও পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন করতে পারছে না। এ ছাড়া পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি ইউনিট চালু থাকলেও আর এক সপ্তাহের কয়লা মজুত আছে।
পিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম এ প্রসঙ্গে কালবেলাকে বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ ক্রয়ের বিপরীতে দায় ৩২ হাজার কোটি টাকার বেশি। সরকারের ভর্তুকি আটকে আছে। যে কারণে আমরা বিল পরিশোধ করতে পারছি না। ফলে বর্তমানে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়েছে। চলমান পরিস্থিতি আগামী মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আগামী গ্রীষ্মকাল। ওই সময় যাতে লোডশেডিং না হয়, তার আগেই আমরা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য কয়লার মজুত গড়ে তুলতে চাই।