কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত শের-ই-বাংলা নৌঘাটির সম্প্রসারনের জন্য ভূমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও জোয়ার-ভাটার পানিতে বর্ষা মৌসুমে ঘর-বাড়িগুলো প্রায় অর্ধনিমজ্জিত থাকে। অধিকন্তু, রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থায় যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। এদিকে, ভূমি অধিগ্রহন হলেও অর্থ পরিশোধ করে তাদের উচ্ছেদের বিষয়ে উদাসীন রয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ফলে, সড়ক সংষ্কারের কাজ স্থবির হয়ে পরেছে। অতিদ্রুত ভূমি অধিগ্রহনের সমুদয় টাকা পরিশোধ করে অনত্র বসবাস করার ব্যবস্থা করবেন বলে দাবী জানান ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বানাতিপাড়া ও গোলবোনিয়া মৌজার অধিকাংশ জমি শের-ই-বাংলা নৌঘাটি’র সম্প্রসারনের জন্য অধিগ্রহন করা হয়েছে। এ দু’টি মৌজায় বানাতিপাড়া, পশরবুনিয়া, ছোনখোলা, দশকানি ও চরপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে প্রায় কয়েক হাজার লোক বসবাস করছে। তাদের সকল জমিজমা অধিগ্রহন করা হলেও ক্ষতিপূরন পরিশোধে কালক্ষেপন করছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এদিকে কখন তাদের উচ্ছেদ করা হয় এ আতংকে দিন কাটাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো। আবার ক্ষতিপূরনের অর্থ না পাওয়ায় পারছে না অনত্র গিয়ে বসবাসের ব্যবস্থা করতে। ফলে, ক্ষতিপূরন না পাওয়া পর্যন্ত যে যার অবস্থানেই বসবাস করছে। তাই নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে তাদের কলাপাড়া উপজেলা শহরসহ অনত্র যাতায়ত করতে হয়। কিন্তু, অধিগ্রহনকৃত এলাকা হওয়ায় সকল ধরনের সংষ্কার কাজ প্রায় বন্ধের পথে। ফলে, রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় ওই এলাকার লোকজন এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে। সরকার অধিগ্রহনকৃত জমি ও বসতভিটার টাকা পরিশোধ করবে অন্যথায় যোগযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে বসবাস করার মতো ব্যবস্থা করবে এটাই তাদের দাবী।
পশরবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্থ লিটন বলেন, আমাদের রাস্তার খুব খারাপ অবস্থা চলাচল করতে পারছি না। সামান্য বর্ষা ও জোয়ারের পানিতে বাড়িঘর, পুকুরসহ সব পানিতে তলাইয়া য়ায়। রাস্তায় কোন গাড়ি চলতে পারেনা তাই মাথায় বস্তা নিয়ে হাইটা যাইতে হয়। সরকার আমাদের বাড়িঘরের নোটিশ দিয়া রাখছে, টাকা-পয়সা দেয় না আর উঠাইয়াও দেয় না। আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে আছি।
লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বলেন, আমি এবিষয়ে একাধিকবার যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। আবারও বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে কলবো।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ভূমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থদের টাকা পরিশোধের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা করবো। কিন্তু অর্থ পরিশোধে বেশি বিলম্ব হলে তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করবো।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. কুতুবুল আলম বলেন, ওখানে কয়েকটি মেঘা প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। অনেকের ক্ষতিপূরন পরিশোধ হয়েছে। এখানে যেসকল ক্ষতিগ্রস্থরা রয়েছে তাদের ক্ষতিপূরন দেয়ার দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।