মো: মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক => রাঙ্গাবালী একটি দ্বীপ। বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে এ দ্বীপের জন্ম। দ্বীপটির তিনদিকে নদী আর একদিকে সাগর। একসময় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার অধীনে বিচ্ছিন্ন একটি ইউনিয়ন ছিল এটি। সময়ের সঙ্গে এর আয়তন ও জনসংখ্যা বেড়েছে। নদী ও সাগর বেষ্টিত এ দ্বীপটিকে এগারো বছর আগে স্বতন্ত্র উপজেলায় উন্নীত করা হয়। তবে সেখানে এখনো গড়ে ওঠেনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। নদী বেষ্টিত এ জনপদে পল্লী চিকিৎসক ও কবিরাজই একমাত্র ভরসা।
দক্ষিণাঞ্চলের জেলা পটুয়াখালীর সর্ব দক্ষিণে ৪০ কিলোমিটার দূরের নদীপথের উপজেলা রাঙ্গাবালী। প্রায় দেড় লাখ মানুষের বসবাস এখানে। এর উত্তরে আগুনমুখা, পশ্চিমে রামনাবাদ, পূর্বে তেঁতুলিয়া নদী ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়। দীর্ঘ ছয় বছর অতিবাহিত হলেও স্বাস্থ্যসেবা থেকে আজও বঞ্চিত এ জনপদের মানুষ। তাদের দাবি, দ্রুত এ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হোক।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাহেরচর বন্দরের বাসিন্দারা বলেন, ‘আমাদের এলাকাটা খুবই দুর্গম জনপদ হিসেবে পরিচিত। নদীকেন্দ্রিক যোগাযোগ। আমাদের উপজেলায় হাসপাতাল না থাকায় অসুস্থ রোগীদের পাশের উপজেলা কিংবা জেলায় নদীপথে নিতে হয়। আবার নদী যখন উত্তাল থাকে, তখন নৌযান চলাচল করে না। তখন শুধু নিয়তির ওপর নির্ভর করতে হয়। এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে আমাদের উপজেলায় একটা হাসপাতাল খুবই দরকার।’
উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, ‘এমন উপজেলায় বাস করি, যেখানে একজন এমবিবিএস ডাক্তারও নেই। আর হাসপাতাল তো অনেক দূরের কথা। এখানকার লোকজন এখনো আদিকালের হেকিম-কবিরাজের ঝাড়-ফুঁক ও তাবিজ-কবজের ওপর নির্ভর করে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে রাঙ্গাবালী, ছোটবাইশদিয়া ও চরমোন্তাজে একটি করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলেও বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে আজও তা চালু করা হয়নি। চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নে একটি আরডি (রুরাল ডিসপেনসারি) থাকায় সেখানে কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। এ কেন্দ্রগুলোতে চলছে নামমাত্র চিকিৎসা। সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল কর্মকর্তা ও পরিবার কল্যাণ চিকিৎসক নিয়োগ থাকলেও মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এ ছাড়া গ্রামগঞ্জে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা চালু করলেও সেখানে তেমন সেবা মেলে না।