মাগুরা প্রতিনিধি।। মাগুরায় জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এর সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৫ নভেম্বর সকালে সদর থানা পুলিশ মাগুরা সদরের গাংনালিয়া ও বরিশাট গ্রাম সংলগ্ন কুমার নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের নীচ থেকে একটি বস্তাবন্দি তোষকের পাশে মানুষের মাথার খুলিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় উদ্ধার করে। মাগুরা থানা পুলিশ বাদী হয়ে এ ঘটনা সংক্রান্তে এজাহার দাখিল করলে মাগুরা সদর থানার মামলা নং-২০ তারিখ ১৬ নভেম্বর ধারা- ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
তাৎক্ষণিক ভাবে মাগুরা পুলিশ সুপার মোঃ মশিউদ্দৌলা রেজা, পিপিএম (বার) নির্দেশে বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত আসামী গ্রেফতারসহ মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল (সিসিআইসি) ও মাগুরা সদর থানাকে নির্দেশনা প্রদান করে। নির্দেশেনা মোতাবেক মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ কলিমুল্লাহ,ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপস্) মোঃ তোফাজ্জল হোসেন এর সহযোগিতায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার এর নেতৃত্বে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল (সিসিআইসি) ও মাগুরা সদর থানার অফিসারদের সমন্বয়ে একটা চৌকস টিম মাগুরা জেলার বিভিন্ন থানাসহ আশপাশ এলাকার থানা সমূহের মানুষ নিখোঁজ সংক্রান্ত জিডি পর্যালোচনা করে এবং নিখোঁজ ব্যাক্তিদের পরিবারের সাথে আলাপ আলোচনা করে তথ্য সংগ্রহ করে। প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে, গত ১৭ অক্টোবর বেলা ১১ টার সময় মাগুরা সদর থানাধীন ৯নং ওয়ার্ড এর কলেজপাড়া এলাকা থেকে মোছাঃ মারিয়া খাতুন (১৭) পিতা-মোঃ আসাদুজ্জামান, গ্রাম-নড়িহাটি, ইউপি-হাজীপুর, থানা-মাগুরা সদর, জেলা-মাগুরা নিঁখোজ হয়। এ সংক্রান্তে নিঁখোজ মোছাঃ মারিয়া খাতুন এর ভাই মোঃ জহিরুল ইসলাম মাগুরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করে যার নম্বর ১১৮৬, তাং ১৮/১০/২০২৩ ইং সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত আসামী শশী আহম্মেদ নিশান (১৯), পিতা-নবুয়াত আলী মোল্যা, নবুয়াত আলী মোল্যা (৪৬), পিতা-নওশের আলী মোল্যা উভয় গ্রাম-দুর্গাপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-মাগুরা’দ্বয়-কে সনাক্ত করে তাদের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ঘটনার প্রায় (এক) সপ্তাহ পূর্বে ভিকটিম মোছাঃ মারিয়া খাতুন (১৭) এর সাথে ধৃত আসামী শশী আহম্মেদ নিশান (১৯) এর ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে আসামী শশী আহম্মেদ নিশান গত ১৭অক্টোবর নিঁখোজ মোছাঃ মারিয়া খাতুনকে ফুসলিয়ে ভুল বুঝিয়ে আসামীর মাগুরা সদর থানাধীন স্টেডিয়াম গেটের বিপরীতে আদর্শপাড়া নামক স্থানে জনৈক আমির খসরু ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামী শশী আহম্মেদ নিশান তার পিতা নবুয়াত আলী মোল্যা (৪৬) এর সহায়তায় উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনা গোপন করার লক্ষ্যে মৃতদেহ গুম ও আলামত ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে আসামী শশী আহম্মেদ নিশান এর ব্যবহৃত তোষক দ্বারা মৃতদেহ পেচিয়ে এবং বস্তাবন্দি করে লাশ মাগুরা সদর থানাধীন গাংনালিয়া ব্রীজের নীচে নদীতে ফেলে দেয়। উল্লেখ্য আসামীদ্বয় হত্যাকান্ডের ঘটনা গোপন করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের ব্যাবহৃত ১ একটি ছোট ভ্যানিটি ব্যাগ,এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, একটি বোরকা, জুতাসহ মোবাইল ফোনটি ভেঙ্গে ব্রীজের উপর থেকে নদীর পানিতে ফেলে দেয়। আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।