পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাবেক পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও পটুয়াখালী ০৪ আসনের সাংসদ মো. মাহবুবুর রহমান তালুকদার, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম রাকিবুল আহসান, সাবেক মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ নেতা-কর্মীর নামে হত্যা ও লুটতরাজ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আশীষ রায়ের আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে ওসি কলাপাড়াকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন। বাদী পক্ষের নিযুক্তীয় কৌশুলী অ্যাডভোকেট খন্দকার শাহাব উদ্দিন ও আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কাইউম এ আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
১৪ বছর আগে ছাত্র দল নেতা জিয়াউর রহমান’র মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. সাইফুর রহমান বাদী হয়ে রবিবার দুপুরে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরও ২০/২৫ জন অজ্ঞাত আসামীর কথা বলা হয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়, হাসিনা বিরোধী আন্দোলন বন্ধ করার জন্য আসামীরা ২৪ অক্টোবর ২০১০ খ্রী. পরিকল্পিতভাবে বাদীর ভাই পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদল নেতা ভিকটিম জিয়াউর রহমানকে হত্যার জন্য বেধড়কভাবে কুপিয়ে জখম করে। তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহবুবের বাসায় হত্যার পরিকল্পনা শেষে মহবুব ও তার দলের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল আসামীদের কিলিং মিশনের জন্য অর্থায়ন করে। এতে আসামীরা ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মোটরসাইকেল যোগে বাদীর বসতবাড়িতে ত্রাস সৃষ্টি করে বসত ঘর থেকে ভিকটিম জিয়াকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাড়ী থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করে পাখিমারা বাজারে নিয়ে আসে। প্রভাবশালী ১-৪ নম্বর আসামীর নির্দেশে আসামীরা হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিম জিয়ার হাত, পা, বুক, পিঠে কুপিয়ে গুরুতর কাটা জখম করে ও শরীরের হাড় ভেঙ্গে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে রাখে। এরপর আসামীরা বাদীর বাড়ী থেকে ১৭টি গরু, মূল্য অনুমান ১০ লক্ষ এবং ১৬টি ছাগল, মূল্য অনুমান ১ লক্ষ টাকা লুটতরাজ করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন। উক্ত অমানবিক নির্যাতনে দীর্ঘদিন চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ভিকটিম বাড়ীতে এসে মত্যু বরণ করে। কলাপাড়া থানা পুলিশকে ভিকটিমের লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য অনুরোধ জানালে ১ নং আসামী মাহবুবের প্রভাবে পুলিশ এসে ভিকটিমের লাশ দ্রুত দাফনের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। থানা ও কোর্ট বাদীর মামলা নেয়নি। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে নিরপেক্ষ সরকার থাকায় বাদী তার ভাইয়ের হত্যা ও লুটতরাজের বিচার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, আদালতের আদেশ হাতে পেয়ে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।