গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদ শুরু থেকেই গণহত্যার বিচারে সোচ্চার। কিন্তু সরকারের তৎপরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গণহত্যার বিচার ও আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট না করলে যমুনা ঘেরাও করা হবে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগ যে পাপ করেছে, ওরা কোনো ক্ষমা পেতে পারে না। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে। আ.লীগের সঙ্গে সহানুভূতি দেখানো মানে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। এ বেইমানি যারা করবে, তাদের অবস্থাও আ.লীগের মতো হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের অযোগ্য উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভবপর নয়। রাষ্ট্র সংস্কার করতে বিপ্লবী উপদেষ্টা দরকার। কিন্তু এ উপদেষ্টাদের অধিকাংশই সুশীল। তাই তাদের কাছে রাষ্ট্র সংস্কার প্রত্যাশা করি না। ইতোমধ্যে তাদের ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সমকালে তাদের গাড়ি বিলাস ও গাড়ি ব্যবহারে অনিয়ম প্রকাশিত হয়েছে। এটাই কি রাষ্ট্র সংস্কার?
আমরা গত ৬ মাসের জবাবদিহিতা চায়, রাষ্ট্র সংস্কারের নমুনা দেখতে চায়। উপদেষ্টাদের আর্থিক হিসাব জনসম্মুখে পেশ করতে হবে। তারা জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, আগে নিজেদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুক। বাংলা একাডেমিতে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ স্যারকে পেছনে দাঁড় করিয়ে রাখা কি রাষ্ট্র সংস্কার? অযোগ্যরা যোগ্যদের সম্মান করতে জানে না।
রাশেদ খাঁন বলেন, আবার সরকারের সারাদেশের সব দপ্তরের কমিটিতে একজন করে ছাত্র প্রতিনিধি দেওয়া হচ্ছে। কমিটিতে ছাত্রদের কাজ কী? সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের খবরদারি খারাপ বার্তা দিচ্ছে। সরকারে কে কোথায় বসবে, এগুলো যদি ছাত্ররা ঠিক করে, তাহলে তাদের সম্পর্কে ভুল মেসেজ যাবে।
দল গঠন করবেন, শুভকামনা রইলো। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের চেতনা এককভাবে দখল করে সরকারের সহযোগিতায় কিংস পার্টি জনগণ মানবেনা। দল গঠন করতে চাইলে উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করতে হবে। কিন্তু আ.লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের আগে পদত্যাগ জনগণ মানবে না। এসব করলে জাতি বিশাল সংকটে পড়বে।
গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আ.লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না। বরঞ্চ আমরা অনেকাংশেই দেখতে পাচ্ছি আ.লীগের বিষয়ে নমনীয়তা ও উদারতা। আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আ.লীগের রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে, নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
এসময় ঢাকা জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি অ্যাড. শেখ শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদ সদস্য মাহফুজুর রহমান, সহ-সভাপতি আবদুর রহমান, জাফর মাহমুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ নুরুল করিম শাকিল প্রমুখ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা ও একদলীয় ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে গত ১৬ বছরের গুম, খুন, উন্নয়নের নামে লুটপাট, অর্থ পাচারসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার ও রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা জেলা গণঅধিকার পরিষদ এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন নেতারা।