কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের মামলায় আনছার আকন (৬০) নামক এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে আদালত। তার নামে প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের হাজী আমজেদ মোল্লার ছেলে মো. জসিম মোল্লা বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। বুধবার (৮ নভেম্বর) আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাকে গ্রেফতার করেন বিজ্ঞ আদালত। বাদীকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধে তার ছেলে সোহেলকেও এ মামলায় আসামী করা হয়েছে। তার উপর আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ ও পুলিশ প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের বড় ৫ নং গ্রামের মৃত হামজেদ আলী আকনের ছেলে আনছার আকন একজন প্রতারক ও ধুরন্দর প্রকৃতির লোক। সে ও তার ছেলে সোহেল একত্রিত হয়ে এলকার অসহায় মানুষদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি করে আসছে। বাদী জসিম মোল্লা কলাপাড়া উপজেলার নয়াকাটা মৌজার এস.এ খতিয়ান নং ১৪২/১৪৩/১৪৪/১৪৫/১৪৭ ও চান্দুপাড়া মৌজার এস.এ ১০৩/১০৪/১০৫ নং খতিয়ানের জমির রেকর্ডীয় মালিক কাদির খাঁনের ওয়ারিশগনের নিকট থেকে সোলে ডিক্রি প্রাপ্ত হয়ে দলিল মূলে ভোগদখল করে আসছিলো। উক্ত জমি পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর অধিগ্রহন করে। গ্রেফতারকৃত আনছার আকন লোভের বসবর্তী হয়ে বাদীর বিপক্ষে পটুয়াখালী যুগ্ন জেলা আদালতে একটি বন্টন মামলা করেন। পরে জমির টাকা উত্তোলনে বাধা দিতে পটুয়াখালীর এল.এ শাখায় আপত্তি দায়ের করেন। যার কারনে বাদীপক্ষ তাদের জমি অধিগ্রহনের প্রায় ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা উত্তোলন হতে বিরত থাকেন। পরবর্তীতে রোয়েদাদনামার মাধ্যমে ওই মামলার মিমাংসার আশ্বাস দিয়ে বাদী জসিম মোল্লা ও তার চাচা আহসান হাবিব মোল্লার স্বাক্ষরিত তারিখ বিহীন ২০ লক্ষ টাকা করে দুটি চেক আনছার আকনের কাছে জমা রাখেন। কিন্তু তিনি তার বন্টন মামলাটি উত্তোলন করতে বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করতে থাকে। পরবর্তীতে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে আনছার আকনের করা বন্টন মামলাটি ২০২৩ সালের ২১ আগষ্ট খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু তার আগেই সে অন্যায় লাভের আশায় প্রতারনা ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে তার কাছে সংরক্ষিত চেক দুটি দিয়ে ৪০ লক্ষ টাকার মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত আনছার আকনের প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের বিষয়গুলো প্রমাণিত হয়েছে বলে পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া তার ছেলে সোহেল আকন বাদী জসিম মোল্লাসহ আরো অনেককে ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদানের বিষয়টিও পুলিশ প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আনছার আকনের প্রতারণার বিষয়টি আমলে নিয়ে তাকে গ্রেফতার ও তার ছেলে সোহেল’র উপর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
এবিষয়ে মামলার বাদী জসিম মোল্লা বলেন, আনছার আকন একজন দুষ্ট প্রকৃতির লোক। পটুয়াখালী এল.এ শাখায় আপত্তি দিয়ে আমাদের ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা আটকে রাখে। মিমাংসার মাধ্যমে সে তার আপত্তি তুলে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে আমাদের নিকট থেকে দুটি ব্লাংক চেক ও স্ট্যাম্প জমা রাখে। পরে সে প্রতারণা করে সেই চেক দিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
স্থানীয় অপর এক ভূক্তোভোগী মো. ইজুল হাওলাদার বলেন, আনছার আকন আপত্তি দিয়ে আমার ১ একর ৬৬ শতাংশ জমির টাকা আটকে দিয়েছে। তার দায়েরকৃত মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে। ভূমি দস্যু হিসেবে এলাকায় তার খ্যাতি রয়েছে। এলাকার মানুষ তার দস্যুপনা থেকে নিস্তার চায়।