গাজা উপত্যকায় পৃথক ইসরাইলি হামলায় দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে হোসাম শাবাত আল জাজিরার ও মোহাম্মদ মনসুর প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিক। মঙ্গলবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইত লাহিয়ার পূর্ব অংশে গাড়িতে হামলা চালিয়ে হোসাম শাবাতকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আল জাজিরা মুবাশ্বেরে কাজ করতেন।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার তারেক আবু আযম বলেন, ২৩ বছর বয়সী শাবাত এর আগে আরেকটি ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি গাজায় সংবাদ প্রতিবেদন চালিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দেন। ‘কোনো পূর্ব সতর্কীকরণ ছাড়াই’ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তার গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে শাবাতের লেখা একটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘যদি আপনি এটি পড়ছেন, তাহলে এর অর্থ হলো আমি নিহত হয়েছি — সম্ভবত ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছি।’ গত ১৮ মাসের যুদ্ধে, তিনি ‘প্রতিটি মুহূর্ত’ তার জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছেন।
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি উত্তর গাজার ভয়াবহতা মিনিটে মিনিটে নথিভুক্ত করেছি, তারা যে সত্যকে কবর দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তা বিশ্বকে দেখানোর জন্য আমি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমি ফুটপাতে, স্কুলে, তাঁবুতে — যেখানেই পারি ঘুমিয়েছি। প্রতিটি দিন ছিল বেঁচে থাকার লড়াই। আমি মাসের পর মাস ধরে ক্ষুধা সহ্য করেছি, তবুও আমি কখনো আমার জনগণের পক্ষ ত্যাগ করিনি। আমি এখন আপনাদের কাছে অনুরোধ করছি, গাজা নিয়ে কথা বলা বন্ধ করবেন না। বিশ্বকে চোখ এড়িয়ে যেতে দেবেন না। লড়াই চালিয়ে যান, আমাদের গল্প বলতে থাকুন — যতক্ষণ না ফিলিস্তিন স্বাধীন হয়।’
এদিকে সোমবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিক মোহাম্মদ মনসুর নিহত হয়েছেন। আবু আযম বলেন, মনসুরকে ‘তার বাড়িতে … তার স্ত্রী এবং ছেলের সাথে’ হত্যা করা হয়েছে। এখানে আক্রমণ চালানো হয়েছে কোনো ধরনের পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস (জিএমও) অনুসারে, ২ সাংবাদিককে হত্যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা ২০৮ জনে দাঁড়িয়েছে।