কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় হযরত আলী নামের এক ব্যবসায়ীকে মোটরসাইকেল পথরোধ করে সিনেমা স্টাইলে মারধর ও অস্ত্রের মুখে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারনসহ পরকীয়ার স্বীকারোক্তি নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্র তার কাছ থেকে নগদ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সোমবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন নির্জন স্থানে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এনিয়ে স্থানীয় মাসুম বিল্লাহসহ ৮ জনকে আসামী করে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা হয়েছে।
ভূক্তভোগী হযরত আলী জানান, তিনি উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের সুধিরপুর প্রামের মৃত্যু নূরছায়েদ খাঁনের ছেলে। ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের জামাল হাওলাদারের সাথে তার ব্যবসায়ীক সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পাওনা টাকা আনতে তিনি ও তার ফুফাতো ভাই জামাল হাওলাদারের বাড়ি যান। পাওনা সাড়ে তিন লক্ষ টাকা সাথে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে তারা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থাকা স্থানীয় সন্ত্রাসী মাসুৃম বিল্লাহ তার দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের পথরোধ করে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন ও বেদরক মারধরের মাধ্যমে জামাল হাওলাদারের মেয়ের সাথে তার পরকীয়ার স্বীকারোক্তি নেয়। এসময় তার সাথে থাকা নগদ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ওই সন্ত্রাসী বাহিনী তার কাছে মোট ৭ লক্ষ টাকা দাবী করে। ভুক্তভোগী হযরত আলী আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা তাকে রাত সাড়ে নয়টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আঁটকে রেখে মারধর করে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত, জখম ও ফুলাসহ বাম হাত ভেঙ্গে যায়। পরে তাকে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এবিষয়ে আদালতে একটি মামলা করেছেন বলেও তিনি জানান।
ভূক্তভোগী’র ফুফাতো ভাই ইয়াকুব বলেন, সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের পথরোধ করেন। পরে তাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে একজায়গায় আটকে রাখে। এসময় তার ভাই আলীকে অন্য জায়গায় নিয়ে মারধর ও জোরপূর্বক পরকীয়ার স্বীকারোক্তি নিয়ে সাথে থাকা টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। তাদের দাবীকৃত বাকী টাকা না দেয়ায় মিথ্যা তথ্যের সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছে বলেও তিনি দাবী করেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মাসুম বিল্লাহ বলেন, তিনি পরকীয়ার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে যান। পরে ইউপি সদস্যদের উপস্থিতে মুসলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তবে, মারধর ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট বলে জানান।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সোহেল জানান, সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরে পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
মহিপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, মামলার কপি হাতে পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।